চিন্তা মানুষ বা অন্যান্য প্রানীর মস্তিষ্কে পাঠানো ও গ্রহন।

অতীতে বিভিন্ন সাইন্স ফিকশন গল্পে আমরা যা পড়েছি,মুভিতে আমরা যা দেখেছি তার প্রায় সবগুলোই এখন বাস্তব। মাইন্ড কন্ট্রোলের বিষয়টিও এতদিন বইয়ের পাতায় ছিল। কিন্তু হার্ভার্ডের একদল বিজ্ঞানী মাইন্ড কন্ট্রোলকে এখন বাস্তবের জমিনে নামিয়ে এনেছেন। তারা মানুষ ও একটি ইঁদুরের মধ্যে পৃথিবীর প্রথম ননইনভেসিভ ব্রেইন টু ব্রেইন ইন্টারফেস(বিবিআই) বানিয়েছেন যা মানুষকে যথাযথ চিন্তার মাধ্যমে ইঁদুরটির লেজ নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ করে দেয়। এই পদক্ষেপ বিবিআই গবেষণায় এক নতুন দ্বার খুলে দিয়েছে যা দুই বা ততোধিক মানুষের মধ্যে টেলিপ্যাথিক সংযোগ তৈরি করতে সাহায্য করবে। এই মাইন্ড কন্ট্রোলের ব্যাপারটি একদিক দিয়ে ভাল যদি তা বন্ধু বা পরিবারের জন্য হয় , কিন্তু কোন খারাপ মানুষ যদি এই প্রযুক্তিকে খারাপ কাজে ব্যবহার করে
বিগত কয়েক বছরে ব্রেইন টু কম্পিউটার ইন্টারফেসি(বিসিআই) এ ব্যাপক উন্নতি হয়েছে যেখানে কম্পিউটার আপনার চিন্তা কিছু সেন্সরের সাহায্যে পড়তে পারে। কিন্তু উলটা বা কম্পিউটার টু ব্রেইন ইন্টারফেসিং(সিবিআই) এর আবার তেমন কোন অগ্রগতি হয় নি। এর কারণ হলো কম্পিউটারের জন্য আমাদের চিন্তা পড়া সহজ কারণ তখন তাকে ব্রেইনের সাথে লাগানো সেন্সরের ডাটা বিশ্লেষণ করে জাস্ট রেজাল্ট দেখতে হয়। কিন্তু কম্পিউটার যখন নতুন ডাটা আমাদের ব্রেইনে ইঞ্জেক্ট বা প্রবেশ করাতে চাইবে তখন একদম নতুন ধরণের কোন পদ্ধতির সাহায্য দরকার কারণ বিষয়টি ভীষণ জটিল। আমরা জানি না যে নিউরণের মধ্যে তথ্য কিভাবে এনকোড করা থাকে। এর বদলে আমরা যা করতে পারি তা হলো ব্রেইনের যেসব এলাকার কাজ আমরা নির্দিষ্টভাবে জানি সেখানে কম্পিউটার-ব্রেইন ইন্টারফেসিং এর মাধ্যমে স্টিমুলেট করে কিছু কাজ করতে পারি- যেমন ব্রেইনের মোটর কর্টেক্সকে স্টিমুলেট করে আমরা আঙ্গুল নাড়াতে পারি। এতে আঙ্গুল আমরা একদম নির্দিষ্টভাবে কোন নির্দিষ্ট উপায়ে নড়াচড়া করাতে পারব না যেহেতু আমরা ব্রেইনের এনকোডিং টেকনিক জানি না। কিন্তু আঙ্গুলকে শুধুমাত্র নাড়ানো সম্ভব।
হার্ভার্ডের বিবিআই টিম ঠিক এই কাজটিই করেছে। তাদের সিস্টেমে মানুষ একটি ইইজি ভিত্তিক বিসিআই পড়ে থাকে। অন্যদিকে ইঁদুরটি ফোকাসড আল্ট্রাসাউন্ড(FUS) ভিত্তিক সিবিআই পরিহিত থাকে। FUS একটি নতুন প্রযুক্তি যার মাধ্যমে ব্রেইনের কোন নির্দিষ্ট এলাকার নিউরনকে আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে স্টিমুলেট বা উত্তেজিত করা করা সম্ভব। FUS এর সুবিধা হলো এতে দেহের সাথে নতুন কোন যন্ত্র বসাতে হয় না। প্রাথমিকভাবে FUS এর জন্য যে যন্ত্রপাতি লাগে তা বড় হলেও আশা করা যায় ভবিষ্যতে মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করার মতো আকারে এসে যাবে।
ইইজির সাথে বিসিআই মানুষ কখন কম্পিউটার স্ক্রিনের দিকে নির্দিষ্ট প্যাটার্নে তাকাবে তা সনাক্ত করে। তখন বিসিআই ইঁদুরের সিবিআই কে সঙ্কেত পাঠায়। এরপর সিবিআই ইঁদুরের ব্রেইনের মোটর কর্টেক্সে আল্ট্রাসাউন্ড প্রয়োগ করে ফলে ইঁদুরের লেজ নড়ে ওঠে। উপরের ভিডিওতেই আপনারা এর প্রমাণ দেখতে পাবেন। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন বিসিআই ৯৪ শতাংশ নির্ভুল ফলাফল দেয় এবং চিন্তার মাধ্যমের ইঁদুরের লেজ নাড়াতে মাত্র ১.৫ সেকেন্ড সময় লাগে। থিওরিটিক্যালি মানুষ নির্দিষ্ট প্যাটার্নে তাকানোর চেয়ে শুধু চিন্তার মাধ্যমে ইঁদুরের লেজ নাড়াতে পারানোর কথা কারণ সেরকম বিসিআই পৃথিবীতে আছে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা প্রাথমিকভাবে শুধুমাত্র ইঁদুরের সিবিআই উন্নতিকরণের উপরই জোর দিয়েছেন কারণ সেটাই কঠিনতম কাজ।
 সুত্র : http://www.youtube.com/watch?feature=player_embedded&v=VaJjHgyHnEc
চিন্তা মানুষ বা অন্যান্য প্রানীর মস্তিষ্কে পাঠানো ও গ্রহন। চিন্তা মানুষ বা অন্যান্য প্রানীর মস্তিষ্কে পাঠানো ও গ্রহন। Reviewed by Unknown on ১১:১৫ PM Rating: 5
Blogger দ্বারা পরিচালিত.